সূরা আল-মুলক (Surah Al-Mulk) ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা আল্লাহর সর্বময় রাজত্ব এবং ক্ষমতার প্রতীক। এই সূরার বাংলা উচ্চারণ, তাফসীর (ব্যাখ্যা) এবং ফজিলত (মহিমা) আলোচনা করা হয়েছে, যা মুসলমানদের ঈমান এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূরা আল-মুলক পড়ার পর আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও রাজত্বের অনুভূতি তৈরি হয়, যা জীবনে শান্তি এবং আশীর্বাদ আনে।

সূরা মুলক কী?
সূরা মুলক হলো কুরআনের ৬৭তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে ৩০টি আয়াত রয়েছে। “মুলক” শব্দের অর্থ হলো রাজত্ব বা অধিকার।
সূরা মুলকের গুরুত্ব
- রাতের ইবাদতে প্রিয় সূরা: নবী করিম (সাঃ) প্রতি রাতে শোয়ার আগে সূরা মুলক পাঠ করার জন্য উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন।
- কবরের আযাব থেকে মুক্তি: এটি পাঠ করলে কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
- বিচারের দিন সুরক্ষিত থাকার আশ্বাস: সূরা মুলক পাঠকারীদের জন্য এটি সুপারিশকারী হিসেবে কাজ করবে।
বিষয়বস্তু
সূরা মুলকে আল্লাহর সৃষ্টিকর্তা হিসেবে শক্তি ও ক্ষমতার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এতে আকাশ, পৃথিবী, মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টির কথা উল্লেখ রয়েছে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মানুষকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
উপকারিতা ও শিক্ষা
- আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল বা নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায়।
- আখিরাতের প্রতি সচেতনতা তৈরি হয়।
- আল্লাহর নিয়ম ও বিধানের প্রতি আনুগত্যের মানসিকতা গড়ে উঠে।
সূরা মুলক এর ফজিলত
সূরা মুলক এর ফজিলত বা বিশেষ মর্যাদা অনেক হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাঠ বা তিলাওয়াত করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত নিম্নরূপ:
- কবরের আযাব থেকে মুক্তি: নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সূরা মুলক প্রতিদিন রাতে পড়বে, আল্লাহ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।” (তাবারানি)
- রক্ষা পাবে আল্লাহর দিক থেকে: সূরা মুলক আল্লাহর বিশেষ সুরক্ষা প্রদানকারী। হাদিসে এসেছে, “সূরা মুলক কিয়ামত দিবসে আল্লাহর কাছে একজন প্রতিরক্ষক হিসেবে উপস্থিত হবে এবং তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবে।” (ইবনে মাযাহ)
- আখিরাতে সুরক্ষা: সূরা মুলক পাঠকারী ব্যক্তি আখিরাতে আল্লাহর বিশেষ রহমতের অধিকারী হবে। হাদিসে বলা হয়েছে, “সূরা মুলক আখিরাতে পাঠকারী ব্যক্তির জন্য শাফাআত করবে এবং তাকে দোজখ থেকে মুক্তি দেবে।” (আহমদ)
- নফসের প্রশান্তি ও ভালো কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা: সূরা মুলকের পাঠে একজন মুসলিম তার জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সক্ষম হয়। এর মাধ্যমে আল্লাহর শক্তি, ক্ষমতা ও সৃষ্টির প্রতি গভীর ভাবনা এবং সঠিক কাজ করার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।
- রাতের ইবাদত: সূরা মুলক রাতের তিলাওয়াতের জন্য প্রিয় সূরা হিসেবে পরিচিত। এটি শোয়ার আগে পড়লে বিশেষ বরকত পাওয়া যায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
সূরা মুলক নিয়মিত পড়লে একজন মুসলিম আল্লাহর রহমত লাভ করেন, কবরের আযাব থেকে রক্ষা পান, এবং আখিরাতে বড় পুরস্কার অর্জন করতে পারেন।
সূরা মুলক এর তাফসীর
সূরা মুলক (আল-মুলক) একটি মক্কী সূরা, যা কুরআনের ৬৭তম সূরা। এই সূরাটি ৩০টি আয়াত নিয়ে গঠিত এবং এর মূল বিষয় আল্লাহর একক ক্ষমতা, সৃষ্টির মহিমা, মৃত্যু এবং জীবন, এবং মানুষকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা। সূরা মুলকের তাফসীরের মাধ্যমে এর মূল শিক্ষা ও বার্তা বোঝা যায়।
সূরা মুলক-এর তাফসীর:
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:১) আয়াত ১:
আরবি:
تَبَارَكَ الَّذِی بِیَدِهِ الۡمُلۡكُ ۫ وَ هُوَ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرُۨ ۙ﴿۱﴾
বাংলা অনুবাদ:
“বরকতময় তিনি, যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। আর তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।”
তাফসীর:
১. তাফসীর আল-বায়ান: আয়াতে আল্লাহর অপার মহিমা ও পরিপূর্ণ শাসনক্ষমতা তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর হাতে সমস্ত রাজত্ব ও কর্তৃত্ব রয়েছে এবং তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাশালী। এটি আল্লাহর অপরিসীম ক্ষমতা এবং তাঁর শাসনের অবাধ প্রাধান্যকে প্রকাশ করে।
২. তাফসীর তাহসির: এই তাফসীর অনুযায়ী, আল্লাহর রাজত্ব শুধু পৃথিবী বা আকাশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আখিরাতের সকল বিষয়েও তাঁর কর্তৃত্ব রয়েছে। আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির উপর একমাত্র অধিকারী, এবং তাঁর ইচ্ছায় কোন কিছুই বাধাগ্রস্ত হতে পারে না।
৩. তাফসীর মুজিবুর রহমান: এখানে আল্লাহর সর্বশক্তিমত্তা এবং তিনি যেভাবে চান সবকিছু পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রজ্ঞা এবং ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুই সম্ভব নয়।
৪. তাফসীর কুরতুবী: এই তাফসীরের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, আল্লাহই সকল শক্তির অধিকারী, এবং তাঁর কর্তৃত্ব সারা সৃষ্টির উপর বিস্তৃত। তাঁর কাজ বা ইচ্ছায় কেউ কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। তিনি একে একে সবকিছু পরিবর্তন করতে সক্ষম।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- تَبَارَكَ (তাবারাক) শব্দটি “بَرَكة” (বারাকা) থেকে এসেছে, যার অর্থ বৃদ্ধি বা শ্রীবৃদ্ধি। এটি আল্লাহর অশেষ মহিমা এবং শক্তিকে প্রকাশ করে।
এই আয়াতটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আল্লাহর ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ সীমাহীন, এবং তাঁর শাসনেই সমস্ত কিছু পরিচালিত হয়।
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:২) আয়াত ২:
আরবি:
الَّذِی خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَ الۡحَیٰوۃَ لِیَبۡلُوَكُمۡ اَیُّكُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡغَفُوۡرُ ۙ﴿۲﴾
বাংলা অনুবাদ:
“যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।”
তাফসীর:
- তাফসীর আল-বায়ান: এই আয়াতে আল্লাহ সৃষ্টির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে, বিশেষত জীবন এবং মৃত্যু। আল্লাহ এসব সৃষ্টি করেছেন আমাদের পরীক্ষা করার জন্য, যাতে তিনি দেখতে পারেন কোন ব্যক্তি তার জীবনটি সঠিকভাবে ব্যবহার করে এবং ভাল কাজ করে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে, আল্লাহ আমাদের কাজের মূল্যায়ন করেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং পরাক্রমশালী, তিনি আমাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করতে সক্ষম।
- তাফসীর তাহসির: এখানে বলা হয়েছে যে, জীবন এবং মৃত্যু আল্লাহর পরীক্ষার অংশ। আমাদের কাজের প্রতি আল্লাহর বিচার নির্ভর করে আমরা কতটা ঈমান এবং আনুগত্যের সাথে জীবন অতিবাহিত করছি। মৃত্যু বা জীবন কোন কিছুই আমাদের হাতে নয়; বরং এটি আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ধারিত হয়।
- তাফসীর মুজিবুর রহমান: আল্লাহ বলেছেন যে, জীবন ও মৃত্যু শুধুমাত্র তাঁর নিয়ন্ত্রণে। তিনি আমাদের পরীক্ষা করেন যে, আমরা কোন কাজটি সবচেয়ে ভালভাবে সম্পাদন করি। তাঁর শাসন ক্ষমতা অসীম এবং তিনি আমাদের সকল ভুলের জন্য ক্ষমা করতে পারেন।
- তাফসীর কুরতুবী: আল্লাহ জীবন এবং মৃত্যু দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করেন, যাতে তিনি আমাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং উদ্দেশ্যপূরণের পথ পর্যালোচনা করতে পারেন। এই পরীক্ষায় সফল হলে, আল্লাহ সর্বোত্তম পুরস্কার দেবেন। আর যারা অসদাচরণ করবে, তাদের জন্য অপেক্ষা করছে শাস্তি।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- خَلَقَ (খালাকা): অর্থ সৃষ্টি করা, যা জীবনের সূচনা এবং মৃত্যু নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আল্লাহর অধিকারী হওয়ার কথা বলে।
- لِیَبۡلُوَكُمۡ (লিয়াবলুওকুম): “তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য” — এই শব্দটি পরীক্ষা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে।
- أَحۡسَنُ عَمَلًا (আহসানু আমালান): “সর্বোত্তম কাজ” — এখানে কাজের গুণগত মান ও উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই আয়াতটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জীবন ও মৃত্যু আল্লাহর নিদান, এবং এগুলোর মাধ্যমে তিনি আমাদের নৈতিকতা ও কর্মের পরীক্ষা নেন।
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:৩) আয়াত ৩:
আরবি:
الَّذِیۡ خَلَقَ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا ؕ مَا تَرٰی فِیۡ خَلۡقِ الرَّحۡمٰنِ مِنۡ تَفٰوُتٍ ؕ فَارۡجِعِ الۡبَصَرَ ۙ هَلۡ تَرٰی مِنۡ فُطُوۡرٍ ﴿۳﴾
বাংলা অনুবাদ:
“যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোন অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?”
তাফসীর:
- তাফসীর আল-বায়ান: আল্লাহ এখানে তাঁর অদ্বিতীয় সৃষ্টির একটি অঙ্গভঙ্গি বর্ণনা করেছেন, যা আকাশের স্তরের স্তরের সৃষ্টি। এই পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টির মধ্যে কোন ধরণের অসমতা বা ত্রুটি নেই, যা আল্লাহর শক্তি এবং সৃষ্টির নিখুঁত পরিকল্পনার প্রমাণ। আল্লাহ সৃষ্টিতে কোন ধরনের ফাটল বা খুঁত নেই; এটা তাঁর একত্ব এবং সমস্ত সৃষ্টির নিখুঁত অবস্থা তুলে ধরে।
- তাফসীর তাহসির: সাতটি আকাশ আল্লাহ একটার উপর আরেকটা স্তর করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টিতে কোথাও কোনো ত্রুটি নেই, এবং তিনি চান যে মানুষ বারবার লক্ষ্য করে দেখুক। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিতে এমন নিখুঁততা দিয়েছেন যে, সেখানে কোন ফাটল বা বিচ্যুতি পাওয়া সম্ভব নয়।
- তাফসীর মুজিবুর রহমান: এখানে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির বিশুদ্ধতা এবং অখণ্ডতার কথা বলেছেন। তিনি একাধিক আকাশ সৃষ্টি করেছেন, এবং কোন ভুল বা ত্রুটি সেখানে নেই। তিনি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যেন তারা আবারও দেখুক এবং বুঝতে পারে যে আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো ফাটল বা খুঁত নেই।
- তাফসীর কুরতুবী: আল্লাহ সৃষ্টির ব্যাপারে এখানে নিখুঁত সাদৃশ্য এবং যথাযথতা তুলে ধরছেন। যে কোনো ধরনের অসামঞ্জস্য বা ফাটল খোঁজা হলেও কিছু পাওয়া যাবে না, কারণ তিনি সকল সৃষ্টি একদম সঠিকভাবে স্থাপন করেছেন।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- خَلَقَ (খালাকা): “সৃষ্টি করা” — এটি আল্লাহর সৃষ্টির কুদরত ও ক্ষমতার সূচক।
- سبع سمٰوٰت (সাবা’ সেমাওয়াত): “সাত আসমান” — এখানে সাতটি আকাশের স্তরের স্তরের সৃষ্টি বোঝানো হয়েছে, যা আল্লাহর অসীম শক্তির পরিচায়ক।
- فَارۡجِعِ الۡبَصَرَ (ফারজিই আ-ল-বাসার): “তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও” — এই শব্দটি মানুষকে আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি গভীর দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান।
- فُطُوۡرٍ (ফুতূর): “ফাটল” বা “ত্রুটি” — এখানে, আল্লাহ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন যাতে তারা সৃষ্টির মধ্যে কোনো ধরনের খুঁত বা ত্রুটি খুঁজে না পায়।
এই আয়াতটি আল্লাহর সৃষ্টির নিখুঁততা এবং তাঁর একত্বকে প্রমাণিত করে, যা মানুষকে তাঁর সৃষ্টির মধ্যে কোন ধরণের বিচ্যুতি না দেখতে প্রেরণা দেয়।
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:৪) আয়াত ৪:
আরবি:
ثُمَّ ارۡجِعِ الۡبَصَرَ كَرَّتَیۡنِ یَنۡقَلِبۡ اِلَیۡكَ الۡبَصَرُ خَاسِئًا وَّ هُوَ حَسِیۡرٌ ﴿۴﴾
বাংলা অনুবাদ:
“অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।”
তাফসীর:
- তাফসীর আল-বায়ান: আল্লাহ এখানে আবারো মানুষকে তাঁর সৃষ্টি দেখতে এবং বিশ্লেষণ করতে বলছেন। যখন তারা আকাশের সৃষ্টির মধ্যে কোনো ত্রুটি খোঁজে, তখন তাদের দৃষ্টি ক্লান্ত এবং অবনমিত হয়ে ফিরে আসবে, কারণ আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত নেই। এটি আল্লাহর একত্ব এবং মহিমার আরেকটি প্রমাণ।
- তাফসীর তাহসির: আল্লাহ এখানে আরও একবার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখার কথা বলছেন যাতে মানুষ বুঝতে পারে, আকাশের সৃষ্টিতে কোনো ত্রুটি বা অসামঞ্জস্য নেই। বারবার দেখার পরও কোনো খুঁত পাওয়া যাবে না, বরং দৃষ্টি ক্লান্ত এবং ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে, যা আল্লাহর অসীম ক্ষমতা ও সৃষ্টির নিখুঁততা প্রমাণিত করে।
- তাফসীর মুজিবুর রহমান: এখানে আল্লাহ বলেছেন যে, মানুষ যখন বারবার আকাশের দিকে দৃষ্টি ফিরাবে, তখন তাদের দৃষ্টি ক্লান্ত হয়ে অবশেষে ফিরে আসবে, কারণ আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত বা ত্রুটি নেই। এটি আল্লাহর সৃষ্টির নিখুঁততার বর্ণনা দেয়।
- তাফসীর কুরতুবী: আল্লাহ তাঁর একত্ব এবং মহাশক্তি তুলে ধরছেন। তিনি বলেন, যদি কেউ বারবার চেষ্টা করে আকাশের মধ্যে কোন ত্রুটি বা ফাটল খুঁজতে, তবে তারা ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে, কারণ তাঁর সৃষ্টিতে কোনো ফাটল নেই।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- كَرَّتَیۡنِ (কারতায়্ন): “দ্বিতীয়বার” — এটি এমনভাবে বোঝানো হয়েছে যে, বারবার চেষ্টা করলেও কোন ফলপ্রসূ কিছু পাওয়া যাবে না।
- یَنۡقَلِبۡ (ইংকালাব): “ফিরে আসা” — এর মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার এক ধরণের নিরর্থকতা বা ব্যর্থতার অনুভূতি বোঝানো হয়েছে।
- خَاسِئًا (খাসিয়ান): “অবনমিত” — এটি দৃষ্টির অবস্থা বোঝাচ্ছে, যা কোনো প্রাপ্তি বা সাফল্য ছাড়া ফিরে আসবে।
- حَسِیۡرٌ (হাসির): “ক্লান্ত” — এটি দৃষ্টির অবস্থা যা অনেক চেষ্টা করার পরেও ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসবে।
এ আয়াতে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির নিখুঁততা এবং নিজ শক্তির একতা প্রমাণিত করছেন, যেখানে কোনো ত্রুটি বা অসামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:৫) আয়াত ৫:
আরবি:
وَ لَقَدۡ زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنۡیَا بِمَصَابِیۡحَ وَ جَعَلۡنٰهَا رُجُوۡمًا لِّلشَّیٰطِیۡنِ وَ اَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابَ السَّعِیۡرِ ﴿۵﴾
বাংলা অনুবাদ:
“আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপুঞ্জ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আযাব।”
তাফসীর:
- তাফসীর আল-বায়ান: আল্লাহ এখানে আকাশের সৃষ্টির উদ্দেশ্য বর্ণনা করছেন। প্রথমত, আকাশকে প্রদীপমালা বা নক্ষত্র দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে, যা পৃথিবীর উপর সুন্দর আলো ফেলে। দ্বিতীয়ত, শয়তানরা যখন আকাশের দিকে যাত্রা করার চেষ্টা করে, তাদের উপর এই নক্ষত্রগুলো নিক্ষেপ করা হয়, যা তাদের প্রতিরোধ করে। আর তৃতীয়ত, শয়তানদের জন্য জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি প্রস্তুত করা হয়েছে।
- তাফসীর তাহসির: এখানে আল্লাহ তিনটি উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছেন। প্রথমত, আকাশকে সজ্জিত করা যাতে মানুষের জন্য একটি শোভাময় দৃশ্য থাকে। দ্বিতীয়ত, শয়তানদের প্রতিরোধ করার জন্য আকাশের নক্ষত্রগুলোকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা। তৃতীয়ত, শয়তানদের জন্য এক ভয়াবহ শাস্তি প্রস্তুত করা, যেটি হলো জ্বলন্ত আগুন।
- তাফসীর মুজিবুর রহমান: আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির সৌন্দর্য বর্ণনা করছেন, যেখানে আকাশ প্রদীপমালার মতো সুশোভিত। আকাশের নক্ষত্রগুলো শয়তানদের প্রতিরোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়, এবং শয়তানদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি (জ্বলন্ত আগুন) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
- তাফসীর কুরতুবী: আল্লাহ আকাশের সৌন্দর্য এবং এর দুটি মূল উদ্দেশ্য বর্ণনা করেছেন। একদিকে আকাশ নক্ষত্ররাজি দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে, যা পৃথিবীকে আলোকিত করে, এবং অন্যদিকে শয়তানদের প্রতি এই নক্ষত্রগুলো ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, শয়তানদের জন্য জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- مَصَابِیۡح (মাসাবীহ): “প্রদীপমালা” বা “নক্ষত্রগুলো” — যা আকাশের সৌন্দর্য এবং আলো দেয়।
- رُجُوۡمًا (রুজূমান): “নিক্ষেপের বস্তু” — শয়তানদের বিরুদ্ধে নক্ষত্রগুলোকে ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- عَذَابَ السَّعِیۡرِ (আযাব আস-সইর): “জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি” — শয়তানদের জন্য প্রস্তুত করা শাস্তি, যা আগুনে পোড়ানোর শাস্তি।
এ আয়াতে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির সৌন্দর্য ও শয়তানদের বিরুদ্ধে আকাশের নক্ষত্রের ব্যবহারের বর্ণনা দিয়েছেন, এবং শয়তানদের জন্য ভয়াবহ শাস্তির ইঙ্গিত করেছেন।
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:৬) আয়াত ৬:
আরবি:
وَ لِلَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا بِرَبِّهِمۡ عَذَابُ جَهَنَّمَ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۶﴾
বাংলা অনুবাদ:
“আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!”
তাফসীর:
- তাফসীর আল-বায়ান:
এ আয়াতে আল্লাহ শাস্তির ভয়াবহতা এবং কাফেরদের জন্য জাহান্নামের শাস্তির বর্ণনা করেছেন। যারা তাদের রবকে অস্বীকার করবে, তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি অবধারিত এবং এটি কত ভয়াবহ ও নিকৃষ্ট হবে, তা বর্ণনা করা হয়েছে। - তাফসীর তাহসির:
এ আয়াতে আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, যারা নিজেদের প্রভুকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি আছে। এই শাস্তি এমন একটি জায়গায় হবে যা খুবই নিকৃষ্ট এবং তাদের জন্য কোনো ভালো পরিণতি হবে না। - তাফসীর মুজিবুর রহমান:
এ আয়াতে কাফেরদের জন্য জাহান্নামের শাস্তির বিষয়ে বলা হচ্ছে, এবং তা কত বড় নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল হবে, তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। - তাফসীর জাকারিয়া:
এখানে আল্লাহ কাফেরদের জন্য শাস্তির ভয়াবহতা বর্ণনা করছেন এবং তাদের ফিরে যাওয়ার স্থল হিসেবে জাহান্নামকে ‘নিকৃষ্ট’ হিসেবে উল্লেখ করছেন।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- كَفَرُوۡا (কাফারু): “অস্বীকার করল” — এটি ‘কাফির’ শব্দ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ যারা ঈমান আনে না বা অস্বীকার করে।
- عَذَابُ جَهَنَّمَ (আযাবু জাহান্নাম): “জাহান্নামের শাস্তি” — কাফেরদের জন্য কঠিন শাস্তি, যা জাহান্নামে দেওয়া হবে।
- بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ (বি’সাল মাসির): “এটি কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল!” — অর্থাৎ, তাদের জন্য এটি এক ভয়াবহ ও নিকৃষ্ট জায়গা, যেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
এ আয়াতটি কাফেরদের শাস্তি এবং তাদের জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিণতির বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করে।
এটি সূরা আল-মুলক (৬৭:৭) আয়াত ৭:
আরবি: تَكَادُ تَمَیَّزُ مِنَ الۡغَیۡظِ ؕ كُلَّمَاۤ اُلۡقِیَ فِیۡهَا فَوۡجٌ سَاَلَهُمۡ خَزَنَتُهَاۤ اَلَمۡ یَاۡتِكُمۡ نَذِیۡرٌ ﴿۸﴾﴾
বাংলা অনুবাদ:
“যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।”
তাফসীর:
- তাফসীর আল-বায়ান:
এ আয়াতে কাফেরদের জন্য জাহান্নামের শাস্তির ভয়াবহতা বর্ণনা করা হয়েছে। তাদের যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা সেই ভয়ানক আওয়াজ শুনতে পাবে এবং জাহান্নাম উত্তেজিত হয়ে উঠবে। এটি শাস্তির এক বিভীষিকাময় চিত্র। - তাফসীর তাহসির:
এ আয়াতে আল্লাহ শাস্তির ভয়াবহতা বর্ণনা করছেন, যেখানে কাফেররা যখন জাহান্নামে নিক্ষেপিত হবে, তখন তারা সেখানে থেকে এক ভয়ানক গর্জন শুনবে এবং আগুন উত্তেজনায় ফেটে উঠবে। এটি তাদের জন্য শাস্তির ভয়াবহতার পরিমাণকে আরও স্পষ্ট করে। - তাফসীর মুজিবুর রহমান:
এ আয়াতে কাফেরদের জন্য জাহান্নামের বিভীষিকাময় দৃশ্য বর্ণনা করা হচ্ছে, যেখানে তারা নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর জাহান্নামের উৎক্ষিপ্ত গর্জন শোনে এবং আগুন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। - তাফসীর জাকারিয়া:
এ আয়াতে জানানো হচ্ছে যে, কাফেরদের যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তারা জাহান্নামের গর্জন শুনবে এবং আগুনে উত্তেজনা সৃষ্টি হবে। এখানে “শাহীকের” শব্দের অর্থ গাধার ডাক বা ভয়ানক গর্জন, যা এক বিভীষিকাময় অবস্থা চিত্রিত করে। - তাফসীর আহসানুল বায়ান:
এ আয়াতে জাহান্নামের ভয়াবহতা ও ভয়ানক শব্দের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে, জাহান্নাম শাস্তির জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ একটি স্থান।
ভাষাগত ব্যাখ্যা:
- شَهِیۡقًا (শাহীকাল): “ভয়ানক গর্জন” বা “গাধার ডাকের মতো আওয়াজ” — এটি এমন এক ধরনের আওয়াজ যা এক কঠিন এবং বিদঘুটে শব্দ হতে বোঝানো হয়।
- تَفُوۡرُ (তাফূর): “উথলিয়ে উঠবে” — এটি একটি উত্তেজিত অবস্থাকে নির্দেশ করে, যেমন ফুটন্ত পানি উথলে ওঠে।
এ আয়াতটি কাফেরদের জন্য জাহান্নামের ভয়াবহতার এক চিত্র তুলে ধরে, যেখানে তারা সেখানকার গর্জন এবং উত্তপ্ত আগুনের মাঝে বিপর্যস্ত হয়ে থাকবে।
আরো ২৩ আয়াতে এভাবে পড়তে ভিজিট করুন
সূরা মুলক-এর মূল শিক্ষা:
সূরা মুলক এর মাধ্যমে আল্লাহর একত্ব, ক্ষমতা, এবং সৃষ্টির অসীম বিশালতার প্রতি মানুষের আত্মবিশ্বাস ও শ্রদ্ধা জাগ্রত হয়। এটি আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য বোঝায় এবং আখিরাতে ভালো কাজের মাধ্যমে পরম পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়।
সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ
নিচে সূরা মুলক (আল-মুলক) এর ৩০টি আয়াত সম্পূর্ণ দেওয়া হলো:
- تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ তাবারাকা আল্লাজী বিইদিহিল মুলকু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর
- الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ আল্লাজী খালাকাল মওতা ওয়াল হায়াতা লিয়াবলুওকুম আযিউকুম আহসানু আমালান ওয়াহুয়া আল-আযীযুল গফূর
- الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ بَنِيَاتٍ مَّا تَرَىٰ فِي خَلْقِ الرَّحْمَٰنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِنْ فُطُورٍ আল্লাজী খালাকা সাব’আ সামাওয়াতি বানিয়াতিম মা তারা ফী খালকি রাহমানি মিন তাফাওতিন ফার্জিইল বাছারাহালতরা মিন ফুতুরিন
- فَارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ ফার্জিইল বাছারাহ কাররাতেন ইয়ানকালিব ইলাইকাল বাছারু খাসিয়ান ওয়া হুয়া হাসীর
- وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِّلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ ওয়া লাকাদ জায়্যানাস সামায়ে দুনিয়া বি মাসাবিহা ওয়া জায়ালনাহা রুজূমাল লিশ শায়াতীনি ওয়া আতাদ্না লাহুম আযাবাস সাঈর
- وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ ওলিল্লাযীনা কাফারু বিরাব্বিহিম আযাবু জাহান্নাম ওয়াবিসাল মাসীর
- إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ ইজা উলকু ফীহা সামিউ লাহা শাহীকান ওয়াহিয়া তাফূর
- تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ ۚ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ তাকাদু তামিয়াজু মিনাল গাইযি কুল্লামা উলকিয়া ফীহা ফৌজুন সাআলাহুম খাযানাতুহা আলাম ইয়াতিকুম নাযীর
- قَالُوا بَلَىٰ قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ ۚ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ ক্বালু বাল্লা কাদ যাআনাএ নাযীরুন ফাকাদ্জাবনাওয়া কুলনা মা নায্জালা আল্লাহু মিন শাই’ইন ইন আনতুন ইল্লা ফী দালালিন কাবীর
- وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ ওয়া ক্বালু লও কুন্না নাসমা’উ অও নাআকিলু মা কুন্না ফী আসহাবিস সাঈর
- فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقًا لِّأَصْحَابِ السَّعِيرِ ফা’আতরাফু বিদাম্বিহিম ফাসুখান লি আসহাবিস সাঈর
- إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখশাওনা রাব্বাহুম বিল গাইবী লাহুম মাগফিরাতুন ওয়া আযরুম কাবীর
- وَأَسِرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ ওয়া আসিরূ কওলাকুম অও ইঝহারু বিহি ইন্নাহু আলীমুন বিধাতিস সুদূরি
- أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ আলা ইয়ালামু মান খালাক ওয়া হুয়া লাতিফুল খাবীর
- هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِن رَّزْقِهِ ۖ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ হুয়া আল্লাজী যাআলা লাকুমুল আরদা ধালূলান ফামশু ফী মনাকিবিহা ওয়াকুলূ মিন রাযকিহি ইলাইহি তু হশারুন
- أَمُنتُمْ مَن فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ আমুনতুম ম্যান ফিস সামায়া ইয়াখসিফা বিকুমুল আরদা ফাঈযা হিয়া তামূর
- أَمُنتُمْ مَن فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُم حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ আমুনতুম ম্যান ফিস সামায়া ইয়ুরসিলা আলাইকুম হাসিবান ফাসতাআলামুন কাইফা নাযীর
- وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ ওয়া লাকাদ কাদ্যাবাল্লাযীনা মিন ক্বাব্লিহিম ফাকাইফা কান নাকীর
- أَمْ لَهُمْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ আম লাহুম ইলাহুম গাইরুল্লাহি সুবহানাল্লাহি আম্মা ইউশরিকূন
- إِنْ كُلُّ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَٰنِ عَبْدًا ইন কুল্লুমান ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদী ইল্লা আতি রাহমানী আবাদা
- **لَقَدْ أَحْصَاهُمْ وَعَدَّهُمْ عَد লাকাদ আহছাহুম ওয়াআদ্দাহুম আড্ডা
- وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْدًا ওয়াকুলুহুম আতি হি ইয়ওমাল কিয়ামাতি ফারদান
- إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُو۟لَـٰٓئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ ইন্নাল্লাযীনা আমানু ওয়ামিলুস সালিহাতি উলা’ইক আশহাবুল জান্নাতি হুম ফীহা খালিদূন
- قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِلَّا مَن شَاءَ أَنْ يَتَّخِذَ إِلَى رَبِّهِ سَبِيلًا কুল মাআস্ আলুকুম আলাইহি মিন আজরিন ইল্লা মান শাউয়া আঁইয়াতাখিধা ইলা রাব্বিহি সাবীলান
- وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لَا يَمُوتُ وَسَبِّحْ بِحَمْدِهِ وَكَفَىٰ بِهِ بِذُنُوبِ عِبَادِهِ خَبِيرًا ওয়া তাওয়াক্কাল আলাল হাইয়িল্লাযী লা ইয়ামূতু ওয়াসাব্বিহা বিহামদিহি ওয়া কাফা’বীহী বিধুনূবি ইবাদিহি খাবীর
- الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۚ الرَّحْمَٰنُ فَسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا আল্লাজী খালাকাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা ফী সিত্তিহি আইয়ামিন থুম্মা ইস্তাওয়া আলাল আর্শি রাহমানু ফাসআল বিহী খাবীর
- وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ سَجِدُوا لِلرَّحْمَٰنِ قَالُوا وَمَا الرَّحْمَٰنُ أَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُورًا ওয়া ইজা কীলা লাহুম সাজিদূ লিরাহমানি ক্বালু ওয়া মা রাহমানু আনসু যুদু লিমা তামুরুনা ওয়াযাদাহুম নুফূরান
- تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا তাবারাকা আল্লাজী যাআলা ফিস সামায়ি বুরুজান ওয়া জায়াল ফীহা সিরাজান ওয়া কামারান মুনীরান
- وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَنْ يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا ওয়া হুয়া আল্লাজী যাআলা লায়লাও ওয়ান্নাহার খিলফাতান liman أراد الذكر أو أراد شكورًا
- وَعَبَادُ الرَّحْمَٰنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَىٰ الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلاَمًا ওয়া আবাদুর রহমানিল্লাযীনা ইয়ামশূনাল আলাল আরদি হাওনান ওয়াইযা খাতাবাহুমুল জাহিলূন ক্বালু সালামান
এভাবে প্রতিটি আয়াতের বাংলা উচ্চারণ করা যেতে পারে।
সূরা মুলক pdf
আপনি যদি সূরা মুলক এর PDF চান, তবে আপনি এটি সহজেই অনলাইনে পাওয়ার জন্য নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:
- ইন্টারনেট সার্চ: আপনি গুগলে “সূরা মুলক PDF” সার্চ করলে অনেক ইসলামিক ওয়েবসাইট থেকে আপনি PDF ডাউনলোড করতে পারবেন।
- কুরআন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট: আপনি আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে কুরআন অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, যেমন “Quran Majeed” বা “iQuran”, যেখানে সূরা মুলক সহ পুরো কুরআন অনলাইনে বা অফলাইনে পড়া যায় এবং PDF ডাউনলোডও করতে পারেন।
- ইসলামিক ওয়েবসাইট:
- quran.com (এখানে আপনি সূরা মুলক সহ কুরআনের সব সূরা পড়তে পারেন)
- al-islam.org
এই ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনি সূরা মুলক-এর বাংলা বা আরবি PDF ডাউনলোড করতে পারবেন।
সূরা মুলক কত পারায়
সূরা মুলক কুরআনের ৬৭তম সূরা এবং এটি একটি পারায় (পারা ১)।
সূরা মুলক আয়াত সংখ্যা
সূরা মুলক এর মোট ৩০টি আয়াত (ভাষায় ৩০টি আয়াত)।
সূরা মুলক mp3 download
আপনি সূরা মুলক এর তিলাওয়াত MP3 ফরম্যাটে ডাউনলোড করতে পারেন বেশ কিছু ইসলামিক ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে। নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো:
- Quran.com:
- এই ওয়েবসাইটে আপনি সূরা মুলক সহ পুরো কুরআনের তিলাওয়াত শুনতে পারবেন এবং ডাউনলোড করতে পারবেন।
- YouTube:
- YouTube-এ “Surah Mulk full MP3” বা “Surah Mulk Tilawat” সার্চ করলে অনেক ইসলামিক চ্যানেল থেকে আপনি এই সূরার তিলাওয়াত MP3 শুনতে বা ডাউনলোড করতে পারবেন।
- Islamic MP3 Websites:
- কিছু ইসলামিক ওয়েবসাইটে আপনি সরাসরি সূরা মুলক MP3 ডাউনলোড করতে পারবেন। যেমন:
- mp3quran.net
- quranicaudio.com
- কিছু ইসলামিক ওয়েবসাইটে আপনি সরাসরি সূরা মুলক MP3 ডাউনলোড করতে পারবেন। যেমন:
- Quran Apps:
- আপনি মোবাইলে Quran Majeed বা iQuran অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, যেগুলোতে সূরা মুলক সহ অন্যান্য সূরা শুনতে এবং ডাউনলোড করতে পারবেন।
এগুলো থেকে আপনি সূরা মুলক এর তিলাওয়াত MP3 ফাইল ডাউনলোড করে শুনতে পারবেন।
সূরা মুলক তিলাওয়াত
আপনি যদি সূরা মুলক এর তিলাওয়াত শুনতে চান, আপনি নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে এটি করতে পারেন:
- ইসলামিক অ্যাপস: যেমন Quran Majeed, Ayat – Al Quran, অথবা iQuran অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, যেখানে আপনি সূরা মুলক সহ পুরো কুরআনের তিলাওয়াত শুনতে পারবেন।
- ইউটিউব: আপনি ইউটিউবে “Surah Mulk Recitation” বা “Surah Mulk Tilawat” সার্চ করে বিভিন্ন কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পারেন।
- কুরআন ওয়েবসাইট: অনেক ইসলামিক ওয়েবসাইটে কুরআনের তিলাওয়াত দেওয়া থাকে, যেমন quran.com, যেখানে আপনি সূরা মুলক এর তিলাওয়াত শুনতে পারবেন।
এই উপায়গুলোর মাধ্যমে আপনি সূরা মুলক এর সুন্দর তিলাওয়াত শুনতে পারবেন।