জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (NSI)-এর ইতিহাস, গঠন, কার্যক্রম ও আলোচিত অভিযান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। জেনে নিন সংস্থাটির ভূমিকা, কাঠামো, বিতর্ক এবং সাম্প্রতিক খবর।

NSI-এর ইতিহাস ও কার্যক্রম: বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার পূর্ণ বিবরণ
বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা হল জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (NSI)। এটি একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজ করে থাকে। এই ব্লগে আমরা NSI-এর ইতিহাস, কার্যক্রম, কাঠামো, সাম্প্রতিক অভিযান এবং বিতর্কসমূহ বিশ্লেষণ করবো।
Also Read
- NSI-এর অভিযান, সফলতা ও বিশ্বপরিচয়: বাংলাদেশ গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তৎপরতার বিশ্লেষণ
- NSI-এর শীর্ষ ১০ অভিযান ও কার্যক্রম: ২০১৫–২০২৫ সালের আপডেটসহ বিশ্লেষণ
- NSI-এর শীর্ষ ১০ অভিযান ও কার্যক্রম: ২০২৪-২০২৫ সালের আপডেটসহ বিশ্লেষণ
- NSI এর কার্যক্রম: ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা ও বিতর্ক
- অক্ষয় তৃতীয়া 2025: তাৎপর্য, পূজার সময়, শুভ কাজ ও শুভেচ্ছা
NSI-এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
NSI প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালের ২৯ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই। এর মূল লক্ষ্য ছিল সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা মোকাবিলা করা। NSI-এর তত্ত্বাবধান করে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এবং সাধারণত একজন সেনা কর্মকর্তাকে এর মহাপরিচালক (DG) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
বর্তমান মহাপরিচালক:
মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ (নিয়োগ: ১৩ আগস্ট ২০২৪) তথ্য:
- Wikipedia: https://en.wikipedia.org/wiki/National_Security_Intelligence
- DG List: https://en.wikipedia.org/wiki/Director_General_of_National_Security_Intelligence
প্রধান কার্যক্রম
NSI-এর মূল দায়িত্বগুলো হলো:
- দেশের ভেতরে ও বাইরের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে নজরদারি করা।
- সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা।
- ভিআইপি ও রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিশ্লেষণ করা।
- গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রীকে রিপোর্ট প্রদান করা।
অবস্থান ও কাঠামো
- সদর দপ্তর: সেগুনবাগিচা, ঢাকা
- জেলা অফিস: দেশের ৬৪টি জেলাতেই NSI-এর নিজস্ব অফিস রয়েছে।
- নিয়ন্ত্রণকারী দপ্তর: প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়
NSI-এর উল্লেখযোগ্য অভিযান ও সফলতা
১. ইয়েমেনে জাতিসংঘ কর্মকর্তা উদ্ধার (২০২২)
আল-কায়েদা দ্বারা অপহৃত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম-কে ১৮ মাস পর উদ্ধার করে NSI। এটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়।
সূত্র:
Wikipedia – NSI
২. চট্টগ্রাম ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা (২০০৪)
NSI কর্মকর্তারা এই মামলার তদন্তে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অংশ নেয়। মামলায় NSI-এর একাধিক সাবেক কর্মকর্তা অভিযুক্ত হন, পরে উচ্চ আদালতে কিছু অব্যাহতি পান।
সূত্র:
The Daily Star Report
NSI সংক্রান্ত বিতর্ক ও সমালোচনা
- শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যা (২০১২): এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে NSI কর্মকর্তাদের হাত আছে বলে গুঞ্জন উঠলেও নিরপেক্ষ তদন্ত এখনো সম্পন্ন হয়নি।
- রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ: বিভিন্ন সময়ে NSI রাজনৈতিক দলের উপর নজরদারিতে সক্রিয় থাকার কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
জাতীয় গোয়েন্দা সমন্বয় কমিটি
২০০৯ সালে সরকার একটি “জাতীয় গোয়েন্দা সমন্বয় কমিটি (NCIC)” গঠন করে যেখানে NSI ছাড়াও DGFI, SB, RAB, CID ইত্যাদি সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করে।
সূত্র:
NCIC – Wikipedia
উপসংহার
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (NSI) বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। বিভিন্ন সাফল্য ও বিতর্কের মাঝেও সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ভবিষ্যতে এটির কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হবে বলে সাধারণ জনগণ প্রত্যাশা করে।
আপনার মতামত নিচে মন্তব্য করুন এবং পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।